গত ২৫ জুন কক্সবাজার থেকে প্রকাশিত দৈনিক সাগরদেশ পত্রিকায় ‘ভূমি অধিগ্রহন শাখাকে নিয়ে প্রকাশিত মিথ্যা সংবাদের প্রতিবাদ’ শিরোনামে একটি প্রতিবাদ আমি নি¤œস্বাক্ষরকারির দৃষ্টিগোচর হয়েছে। প্রকাশিত প্রতিবাদটি সম্পূর্ণ মিথ্যা, ভিত্তিহীন, উদ্দেশ্যপ্রনোদিত ও শাক দিয়ে মাছ ঢাকার অপচেষ্টা মাত্র। প্রতিবাদটিতে সংশ্লিষ্ট প্রতিবাদকারী সংবাদে উল্লেখিত অভিযোগের বিষয়ে সুষ্পষ্ট ও সুনির্দিষ্ট কোন তথ্য উপস্থাপন করতে পারেননি। জমি না থাকা স্বত্ত্বেও জালিয়াতির মাধ্যমে কয়েক কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়া ছৈয়দুল হক গং জালিয়াতিতে জড়িত ভূমি অধিগ্রহন শাখার সার্ভেয়ার মাসুদ রানা ও অতিরিক্ত ভূমি অধিগ্রহন কর্মকর্তা মুমিনুল হককে ধোয়া তুলসিপাতা সাজানোর চেষ্টা করেছেন। মূলত: ছৈয়দুল হক, আমান উল্লাহ, নজরুল হক, ছেনুয়ারা গং ২৬০ ও ২৬১ নং রোয়েদাদে জমি না থাকা স্বত্ত্বেও ভূমি অধিগ্রহন শাখার সার্ভেয়ার মাসুদ রানা ও অতিরিক্ত ভূমি অধিগ্রহন কর্মকর্তা মুমিনুল হকের যোগাসাজসে কয়েক কোটি টাকা তুলে নিয়েছেন। ঘটনাটি গণমাধ্যমে এবং মাননীয় জেলা প্রশাসকের নজরে আসায় ধুরন্তর ছৈয়দুল হক গং ও ভূমি অধিগ্রহন শাখার দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তারা নিজেদের রক্ষায় সংবাদপত্রে মিথ্যা প্রতিবাদ দিয়ে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছে।
মূলত: রেল লাইনের জন্য জমি অধিগ্রহনে ভূমি অধিগ্রহন শাখার ২৬০ ও ২৬১ নং রোয়েদাদে বি,এস ১২৮৫ নং খতিয়ান থেকে টাকা উত্তোলন করেছেন ছৈয়দুল হক, আমান উল্লাহ, নজরুল হক ও ছেনুয়ারা। বি,এস ১২৮৫ নং খতিয়ানে ২ একর ১১ শতক জমি রয়েছে। ওই খতিয়ানে বদিউল আলম, আবদুর রহিম, আবদুল জলিল, মরিয়ম খাতুন, রোকেয়া খাতুন, সাগেরা খাতুন, জবেদা খাতুন, আনোয়ারা খাতুনের নামে জমির পরিমান বেশি রেকর্ড হয়। একই খতিয়ানে মহাম্মদ শাহ এর নামে জমির পরিমান কম রেকর্ড হয়। এমনকি টাকা উত্তোলনকারী ছৈয়দুল হকের পিতা মৃত নুরুল হকের নামে জমি না থাকলেও বিএস ১২৮৫ নং খতিয়ানে ভুলভাবে তার নাম লিপি হয়। যার কারণে ২০০৯ সালে কক্সবাজারের বিজ্ঞ সিনিয়র সহকারি জজ আদালতে অপর মামলা নং ৩৪৯/২০০৯ দায়ের করেন রফিকুল ইসলাম গং। মামলাটিতে টাকা উত্তোলনকারী ছৈয়দুল হক গংসহ ১৮ জনকে বিবাদি করা হয়েছে। এছাড়া মামলাটিতে জেলা প্রশাসক, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) ও ভূমি অধিগ্রহন কর্মকর্তাকেও বিবাদী করা হয়। বর্তমানে মামলাটি বিচারাধীন এবং ভূমি অধিগ্রহনের টাকা গ্রহন ও প্রদানে স্থিতাবস্থা বজায় রাখার আদেশ জারি রয়েছে। নিয়ম না থাকলেও মামলাটি চলমান থাকা অবস্থায় তারা অন্যত্র জমিও বিক্রি করেছেন। টাকা উত্তোলনকারী ছৈয়দুল হক গং বদিউল আলমের ওয়ারিশ আবদুল কাদের গং এর কাছ থেকে জমি ক্রয় করেছেন। কিন্তু তাদের সেখানে আদৌ কোন জমি নেই। ছৈয়দুল হক, নজরুল হক ও আমান উল্লাহ গং আবদুল কাদের গং এর কাছ থেকে জমি ক্রয়ের দীর্ঘদিন পূর্বেই আবদুল কাদের গং দলিল নং-৮৯১০ তাং ১৯/১২/১৯৮২ ইং মূলে আবদুল জলিলকে, দলিল নং-১২৩২ তাং ২৯/০৫/১৯৮৮ ইং মূলে মো. আমানুল্লাহ ছিদ্দিকীকে, দলিল নং- ৩৩১০ তাং ৩১/১২/১৯৯১ ইং মূলে রহিমা খাতুনকে, দলিল নং- ২৩৩৭ তাং ২৬/১০/১৯৯৬ ইং মূলে মৌঃ মোহাম্মদ ইউনুছকে ও দলিল নং- ২৩৩৮ তাং ২৬/১০/১৯৯৬ ইং মৌঃ মোহাম্মদ ইউনুছকে তাদের প্রাপ্ত জমির চেয়ে বেশি বিক্রি করে দেন। সেই হিসাবে আবদুল কাদের গং অনেক আগেই নিঃস্বত্ত্ববান হয়ে যান। আর সম্পূর্ণ নিঃস্বত্ত্ববান আবদুল কাদের গং এর কাছ থেকে জমি ক্রয় করেছেন মর্মে দলিল উপস্থাপন করে ছৈয়দুল হক, নজরুল হক ও আমান উল্লাহ ভূমি অধিগ্রহন শাখা থেকে ক্ষতিপূরণের টাকা তুলে নেন। অন্যদিকে ছৈয়দুল হক, আমান উল্লাহ, নজরুল হক, জেলা প্রশাসক, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব), ভূমি অধিগ্রহন কর্মকর্তা এবং মোকাবিলা বিবাদিসহ ৩৩ জনের বিরুদ্ধে বিজ্ঞ সিনিয়র সহকারি জজ আদালতে অপর মামলা নং-১৮৩/২০১৮ দায়ের করেন জানারঘোনা ফোরকানিয়া মাদ্রাসার পক্ষে মুহাম্মদ খলিলুর রহমান। ওই মামলায়ও বিবাদীদের শোকজ করা হয়েছে। এসব তথ্য ও বিষয়ে অভিযোগ আকারে কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব), ভূমি অধিগ্রহন কর্মকর্তা, অতিরিক্ত ভূমি অধিগ্রহন কর্মকর্তা ও সার্ভেয়ার বরাবরে একাধিকবার লিখিত আকারে দাখিল করি আমি নি¤œস্বাক্ষরকারি রাশেদুল করিম। দফায় দফায় একাধিকবার অবহিত করা হয় মৌখিকভাবেও। আইনজীবীর মাধ্যমেও একাধিকবার বৈঠক ও মৌখিকভাবে জানানো হয়। এর প্রেক্ষিতে সার্ভেয়ার মাসুদ রানা বৈঠকের নামে আমাকে মোবাইল ফোনে ডেকে নিয়ে আইনজীবীর মাধ্যমে বৈঠকের নামে তালবাহানা করেন। যা আজ প্রমানিত হয়েছে। কারণ সার্ভেয়ার মাসুদ রানা উভয়পক্ষের আইনজীবী নিয়ে অতিরিক্ত ভূমি অধিগ্রহন কর্মকর্তা মুমিনুল হকের কক্ষে বৈঠক করেন। অথচ এর আগেই তারা ছৈয়দুল হক গংয়ের নামে চেক ইস্যু করেন। এতে বুঝতে বাকি থাকে না যে, ছৈয়দুল হক গং এর সাথে যোগসাজসে সার্ভেয়ার মাসুদ রানা ও অতিরিক্ত ভূমি অধিগ্রহন কর্মকর্তা মুমিনুল হক জালিয়াতি করে জমি না থাকা স্বত্ত্বেও ক্ষতিপূরণের টাকা দিয়েছেন। সুতারাং জালিয়াত ছৈয়দুল হক গং এর পক্ষে প্রকাশিত বিভ্রান্তিকর প্রতিবাদে কাউকে বিভ্রান্ত না হওয়ার অনুরোধ জানাচ্ছি।
মোহাম্মদ রাশেদুল করিম, হাজীপাড়া, ঝিলংজা, সদর, কক্সবাজার। ####